পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী

ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের কারাগারগুলোতে থাকা লঘু দন্ডে সাজাপ্রাপ্ত সাড়ে ৫ হাজারের বেশি বন্দিকে বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি দিচ্ছে সরকার। এর বাইরে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধি, পক্ষঘাতগ্রস্ত ও ক্যান্সার রোগীদেরও মুক্তি দেয়া হবে। প্রাথমিকভাবে যাদের মুক্তি দেয়া হবে তাদের তালিকাও সম্পন্ন হয়েছে। এই তালিকায় পুরুষের পাশপাশি নারী বন্দিও রয়েছে। কার্যক্রমের প্রথম ধাপ হিসেবে ইতোমধ্যে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ১৪৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে অন্যদেরও মুক্তি দেওয়া হবে। কারা সূত্রে এসব বিষয় জানা গেছে।
এ দিকে, বিশেষ বিবেচনায় বন্দি মুক্তির বিষয়টিকে উদ্যেশ্য প্রণোদিত ও চক্রান্তমূলক হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মনে করেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতা-কর্মীদের আটক করতে মূলত কারাগারগুলো খালি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, মানবাধিকার সংশ্লিষ্টরাও সরকারের এমন উদ্যোগে দাগি আসামীরা যেন পার পেয়ে না যায় সে বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। এ ছাড়া বিএনপি বা ভিন্ন মত দমনে এমন উদ্যোগ নেওয়া নেয়া হলে পুরো প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ ও সমালোচিত হবে বলেও মনে করেন মানবাধিকার সংশ্লিষ্টরা।
কারা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে ৭০টি কারাগার রয়েছে। এসব কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৩০ থেকে ৩৫ হাজারের মতো। অথচ কারাগারগুলোতে বর্তমানে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা ৮৪ হাজারেরও বেশি। অন্যান্য অপরাধে আটক কিংবা গ্রেফতার বন্দিদের হিসেব করলে এ সংখ্যা লাখের কোটা ছাড়িয়ে যাবে।
কারা সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৮ বিভাগের কারাগারগুলোতে লঘু দন্ডে সাজাপ্রাপ্ত হাজতীদের মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৫ হাজার ৭৭৫ জনকে মুক্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে পুরুষ ৫ হাজার ৪৯১ জন ও নারী বন্দির সংখ্যা ২৮৪ জন। বিভাগ হিসেবে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ২৪৩ জন, ময়মনসিংহে ২৩৭, রাজশাহীতে ১ হাজার ৩২৩ জন, রংপুরে ৩৭৫ জন, খুলনায় ৬০৪ জন, বরিশালে ৪৩৬ জন, যশোরে ১ হাজার ৪০৯ ও সিলেট বিভাগে ১৪৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হবে।
এছাড়া পুরুষ-নারীর অনুপাতে ঢাকা বিভাগে পুরুষ ১ হাজার ১৫৫ জন ও নারী ৮৮ জন। ময়মনসিংহে ২২৯ ও ৮ জন, রাজশাহীতে ১ হাজার ২৫৯ ও ৬৪ জন, রংপুরে ৩৫৩ ও ২২ জন, খুলনায় ৫৮১ ও ২৩ জন, বরিশালে ৪৩১ ও ৫ জন, যশোরে ১ হাজার ৩৩৭ ও ৭২ জন এবং সিলেটে ১৪৬ ও ২ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়ার তালিকায় রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, বিশেষ বিবেচনায় লঘু সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের মুক্তির বিষয়ে একটি তালিকা করা হয়েছে। প্রথম ধাপে ১৬ সেপ্টেম্বর সিলেট বিভাগের ১৪৮জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তালিকার অন্য সবাইকেও মুক্তি দেয়া হবে।
কারা মহাপরিদর্শক বলেন, লঘু দন্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি মানবিক ক্যাটাগরি মুক্তির বিষয়ে বিবেচনায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, পরের ধাপে বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধি, পক্ষঘাতগ্রস্ত ও ক্যান্সার রোগীদের মুক্তি দেয়া হবে। এ ছাড়া বিনা বিচারে দীর্ঘদিন ধরে বন্দি থাকা হাজতিদেরও তালিকা করা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘বর্তমান সরকার বিএনপিসহ বিরোধী মতের লোকদেরকে গণগ্রেফতারের মাধ্যমে কারাগারে বন্দি রেখে এককভাবে নির্বাচন করতে এই উদ্যোগ নিয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ এবার সেটি হতে দেবে না। সাধারণ মানুষ রাজপথে নেমে সরকারের একক নির্বাচনের চক্রান্তের প্রতিবাদ করবে’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বিএনপি ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে একক নির্বাচনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। যা পরবর্তীতে বুমেরাং হবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘সরকার ক্ষমতায় থাকতে অপকৌশল হিসেবে দাগি আসামিদের মুক্তি দিয়ে বিএনপি ও অন্য দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চক্রান্তে এমন উদ্যোগ নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ মূলত ক্ষমতা দীর্ঘয়িত করা ও একটি অগ্রহনযোগ্য নির্বাচন দেয়ার জন্য সরকার এ সব উদ্যোগ নিচ্ছে।’
মানবাধিকারকর্মী নূর খান বিশেষ বিবেচনায় মুক্তির বিষয়ে সাধারণ মানুষের ধারণা প্রসঙ্গে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘সাধারণ মানুষ মনে করছে যে- সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অথনৈতিকভাবে ক্ষমতাবান অনেককে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারের মাধ্যমে কারাগারে আটক করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সাধারণ মানুষের ধারণা।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন উদ্যোগে দাগি আসামীরা যেন পার পেয়ে না যায় এবং কেউ মুক্তি পাওয়ার পরে আবারও কোন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিনা সেটিও কারা কতৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।